আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়াতে অনেকক্ষণ ধরে ট্রেনের জন্য অপেক্ষারত একজন ট্রেন যাত্রী তার সাত বছরের বাচ্চাটাকে নিয়ে এদিক ওদিক ছুটতে দেখা যাচ্ছে অবশেষে দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য স্টেশনের একমাত্র বিশ্রামাগারের কাছে এসে দেখে তালা ঝোলানো রয়েছে। পাশের লোককে তালার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলে দিলেন ভিতরে নোংরা অপরিষ্কার। আরেকজন বলল গত তিন বছর ধরে তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত জামতৈল রেলস্টেশনের একমাত্র দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশ্রামাগারটি। কর্তৃপক্ষের বারংবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও মিলছে না সুফল। যাত্রীদের বসার অনুপযোগী ভিতরে নোংরা দুর্গন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে বিশ্রামাগারটি। অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে দ্বিতীয় শ্রেণির এ বিশ্রামাগারটি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকা রেলওয়ের ট্রেনযাত্রীদের। অনেক ট্রেন যাত্রী বিশ্রামাগারটিতে বিশ্রাম ও প্রকৃতির ঢাকে সারা না দিতে পেরে স্টেশনের আশেপাশে প্রকৃতির ঢাকে সারা দিয়ে থাকেন। এতে করে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জামতৈল রেলস্টেশনের দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশ্রামাগার তালাবদ্ধ । টিকেট কাটার পর স্টেশনের বিশ্রামাগারটিতে বিশ্রামের পরিবেশ না থাকায় আশেপাশে দাড়িয়ে ট্রেনের অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। আবার দীর্ঘক্ষণ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার পর অনেকের প্রকৃতির ঢাকে সারা দিতে খোঁজ করেন গণশৌচাগারের। কিন্তু স্টেশনের বিশ্রামাগারটি তালাবদ্ধ থাকায় ও আশেপাশে কোন গণশৌচাগার না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
ঢাকাগামী ট্রেন যাত্রী নাজমা আক্তার (৪৫) বলেন, স্টেশনের একমাত্র বিশ্রামাগারটি নোংরা তালা ঝোলানো থাকে। ভিতরে বসার ব্যবস্থা থাকলে যাত্রীরা এদিকে ওদিকে ঘোরাঘুরি করতো না। অবহেলিত এই স্টেশনের বিশ্রামাগারটি।
ঢাকাগামী ব্যাংকার আশিক সাহা (৩৪) বলেন, অনেক সময় ট্রেন আসতে দেরি হয় তখন আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরিবার নিয়ে যে বসবো অথবা পরিবারের কারো প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন হলে তখন উপায় থাকে না। কর্তৃপক্ষের কাছে এখানে ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবি জানাচ্ছি।
জামতৈল রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আবু হান্নান জানান, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জামতৈল স্টেশনের বিশ্রামাগারটি ব্যবহারের উপযোগী করতে রেলওয়ে বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু দুই বছর অতিক্রম হলেও বিশ্রামাগারটি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের রেলের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী বীরবল মন্ডল বলেন, জামতৈল রেলস্টেশনের বিশ্রামাগারটি নিয়ে আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি । আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে আপনাদেরকে এটা ঠিক করে দেওয়া হবে।